‘সিআরবি নগরবাসীর নিশ্বাসের জায়গা,হাসপাতাল হতে দেব না ‘

প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২১; সময়: ১০:৩৫ অপরাহ্ণ |

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বরেণ্য সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেছেন,সিআরবি নগরবাসীর নিশ্বাসের জায়গা,হাসপাতাল হতে দেব না। প্রয়োজনে অনশন থেকে শুরু করে যা কিছু করার সব আমরা করব।

সোমবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় সিআরবিতে ‘নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’ আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচিতে এ প্রতিজ্ঞার কথা জানান।

সবাই মিলে সিআরবি ধ্বংসের পরিকল্পনা প্রতিহত করবে উল্লেখ করে ড.সেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রকৃতি সচেতন এবং তিনি মানুষের কথা সব সময় ভাবেন। সুতরাং আমি জানি, তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছে। তাঁকে যথার্থ বার্তা দিতে পারলে তিনি নিশ্চয় আমাদের কথা শুনবেন। সিআরবি রক্ষা চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি।

তিনি বলেন, এ শহরে একসময়ের যে প্রাকৃতিক সুন্দর ঐতিহ্যপূর্ণ জায়গা ছিল কোনোটিই এখন আর নেই। এমনকি চট্টগ্রামের যে পরির পাহাড় বা ফেয়ারি হিল বা কোর্ট বিল্ডিং, একসময় সেখানে উঠলে কর্ণফুলী নদী যে চট্টগ্রাম শহরকে বেষ্টন করে রয়েছে তা দেখা যেত। আজ কিছুই দেখা যায় না। চট্টগ্রাম গাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলকে রক্ষায় বিশ্বের অনেক দেশ অর্থ দিয়ে যাচ্ছে কারণ বিশ্বের অক্সিজেনের চাহিদা মেটায় আমাজন। ঠিক সেরকম এ সিআরবিতে অসংখ্য শতবর্ষী গাছ রয়েছে, কত চমৎকার। এ পুরো অঞ্চলটাই মহানগরীর শ্বাসকেন্দ্র। এখানে রয়েছে শহীদ আবদুর রবের বাসা। এ শহীদ আবদুর রবের সঙ্গে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে কানুনগোড়ায় দেখা হয়েছিল। তখন তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদের জিএস। আমি বলেছিলাম- রব তুমি সাবধানে চলাফেরা করো। শহরে যাচ্ছ বলছো, সাবধানে যেও। সে আমাকে বলেছিল, স্যার আপনি সাবধানে থাকবেন। দুঃখের বিষয় সেই রব শহীদ হয়েছিল। সেই শহীদের জায়গা এ সিআরবি।

এখানে কখনোই প্রফিটের জন্য পিপিপি একটা আমরা করতে দিতে পারি না। বাংলাদেশের সবাই জানেন এ হাসপাতালটি কী রকম ভাবে মৃত মানুষ গেলেও অর্থ আদায় করে। এ চমৎকার জায়গায় মহানগরীর প্রকৃতির সবচেয়ে মনোরম কেন্দ্রে হাসপাতাল করতে আমরা কখনোই দেব না। এটিকে ধ্বংস করতে দেব না। তরুণ প্রজন্ম দেবে না। আমরা যদিও বৃদ্ধ হয়েছি, আমরাও দেব না। আমরা সবাই মিলে প্রতিহত করব।

নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, পেশাজীবী নেতা ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুচ, নাট্যজন প্রদীপ দেওয়নজী, পরিবেশবিদ ড. ইদ্রিস আলী, নগর আওয়ামী লীগের আইরবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, পিপলস ভয়েস সভাপতি শরীফ চৌহান, ন্যাপ নেতা মিঠুল দাশগুপ্ত, আবৃত্তি শিল্পী অঞ্চল চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান আকবর, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু, শিল্পী আলাউদ্দিন তাহের, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মনসুর, যুবনেতা নূরুল আজিম রনি প্রমুখ। বোধনের সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের পক্ষে বক্তব্য দেন বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী।

সন্ধ্যায় আলোক প্রজ্বালনের সময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী চট্টগ্রামের শিল্পীরা। শেষে প্রতিবাদী সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান হয় চট্টগ্রাম যন্ত্র শিল্পী সংস্থার আয়োজনে।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে