বাড়বকুণ্ড তীর্থধামে হামলায় গ্রেফতার ১, সাংসদ-পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাত

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪; সময়: ৩:৫১ অপরাহ্ণ |

জাতীয় মহাতীর্থ সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড তীর্থধাম নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম আল মামুনের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন বাড়বকুন্ড তীর্থধাম উন্নয়ন কমিটি ও শ্রী শ্রী চন্দ্রনাথ ধাম রক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাংসদের বাসভবনে বাড়বকুন্ড তীর্থধাম উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর নেতৃত্বে তারা সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

এ সময় সংসদ সদস্য এস এম আল মামুনকে পুরো ঘটনা অবহিত করা হয়। একটি ভূমিদস্যু গ্রুপ মন্দিরকে টার্গেট করে নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়।

এ সময় চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য আল মামুন বলেন, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধাম ও বাড়বকুন্ড তীর্থধাম সনাতনীদের জন্য খুবইই পবিত্র স্থান। এই পবিত্র স্থান নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সীতাকুন্ডকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অস্থিতিশীল করতে চাইলে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাড়বকুন্ড তীর্থধাম উন্নয়ন কমিটির সদস্য কাঞ্চন আচার্য্য, ডা.যীশুময় দেবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে বাড়বকুন্ড তীর্থধাম উন্নয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করে ঘটনার বিষয়ে অবগত করেন।

এর আগে শনিবার(১০ ফেব্রুয়ারি) বাড়বকুন্ড তীর্থধাম পরিদর্শন করেন বিভিন্ন সনাতনী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়বকুন্ড তীর্থধামের কয়েকটি মন্দিরে ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সীতাকুন্ড থানায় মামলা দায়েল করা হয়েছে। মামলায় একজন আসাম কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া কিছুদিন ধরে একটি ভূমিদস্যুগ্রুপ বাড়বকুণ্ড তীর্থধামের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে। এছাড়া বাড়বকুণ্ড জ্বালামুখী শ্রী বিগ্রহ মন্দিরের সেবায়েতদের উপর হামলা করে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব দিদারুল কবিরের অনুসারীরা। এ নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাড়বকুন্ড তীর্থধাম উন্নয়ন কমিটি ও শ্রী শ্রী চন্দ্রনাথ ধাম রক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো, (১) দেবোত্তর সম্পত্তির সেবায়েতদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ , (২) দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ ও বেদখলমুক্ত করার জন্য খসড়া আইনের বিষয়ে হিন্দু সংগঠনের প্রস্তাবিত সংশোধনী সমূহ যুক্ত করে অবিলম্বে আইন পাশ ও কার্যকর, (৩) সীতাকুন্ড স্রাইন কমিটির পক্ষ থেকে ডাকাত শহীদ গং দের বরাবরে বেআইনী ভাবে প্রদত্ত দেবোত্তর সম্পত্তির বন্দোবস্তী বাতিল ও উচ্ছেদ (৪) সীতাকুন্ড স্রাইন কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় হিন্দু জনসাধারণ ও সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয়পূর্বক দেবোত্তর সম্পত্তির এলাকা সুচিহ্নিত করে অবিলম্বে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ, অবাধ যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ ও বেদখলীয় সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ (৫) স্রাইন কমিটির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে যাবতীয় হিসাব নিকাশ ও কর্মকান্ড সনাতনী জনসম্মুখে প্রকাশ (৬) সীতাকুন্ডের শ্রী শ্রী চন্দ্রনাথ ধাম ও বাড়বকুন্ড তীর্থ ধামকে জাতীয় তীর্থস্থান ঘোষণা করে সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। উভয় ধামের সম্পত্তিগুলো রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। যেসব সম্পত্তি বেদখল হয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধার এবং যেসব জায়গার ভুয়া কাগজপত্র বাতিলের ব্যবস্থা করা (৭) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্রী শ্রী চন্দ্রনাথ ধাম নিয়ে বিভিন্ন উসকানিমূলক সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধ এবং এসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া যারা বিভিন্নভাবে সনাতন ধর্ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি করে বা প্রচারণা চালায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সারাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বলি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং যারা কারাগারে আছে তাদের নিশর্ত মুক্তি দিতে হবে (৮) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান বাড়বকুন্ড তীর্থধামে স্থায়ী নিরাপত্তা চৌকি প্রতিষ্ঠা (৯) বিভিন্ন মঠ ও মিশনের প্রধানদের সমন্বয়ে চন্দ্রনাথধামের আধ্যাত্মিক মান সুনিশ্চিতকল্পে একটি যৌথ সেল গঠন করতে হবে ও মোহন্ত নিয়োগ সুনিশ্চিত ও (১০) সীতাকুন্ডস্থ লবনাক্ষ ও কুমারীকুন্ডের দেবোত্তর সম্পত্তি খাস বাতিল করত তা পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হবে।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে