বর্তমানে জঙ্গিদের কার্যক্রম অনলাইন ভিত্তিক

প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২২; সময়: ১২:১০ অপরাহ্ণ |

হলি আর্টিজান হামলা পরবর্তী সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারাবাহিক জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও নানামুখী তৎপরতায় বর্তমানে জঙ্গিবাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই মুহূর্তে বড় ধরণের কোনো জঙ্গি হামলার হুমকি ও আশঙ্কা নেই।

তবে তারা থেমে নেই, বর্তমানে জঙ্গিদের কার্যক্রম অনেকটাই অনলাইন ভিত্তিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

১ জুলাই হলি আর্টিজানে হামলার ৬ বছর পেরিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য, জঙ্গিদের সক্ষমতা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ সময়ে এক হাজারের বেশি অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ২ হাজার ৪১০ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদসহ গুরুত্বপূর্ণ নথি।

হামলার সক্ষমতা হারিয়ে এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জঙ্গি-উগ্রবাদী তৎপরতা বেড়েছে। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে অনলাইনেই উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদে জড়ানোর হারও বেড়েছে। এর ফলে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গি একটি পরাজিত শক্তি। বাংলাদেশের মানুষ কখনো জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয়নি। যখনই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে তখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অব্যাহত অভিযানে সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনা বাঙালির একটি কলঙ্কের দিন। এ হামলার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের সবাইকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করেছে। অব্যাহত এই অভিযানের ফলে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক এখন অনেকটাই ভঙ্গুর অবস্থা। তবে তারা থেমে নেই, বর্তমানে জঙ্গিদের কার্যক্রম অনেকটাই অনলাইন ভিত্তিক। তারা অনলাইনে তাদের সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে। অনলাইনে র‌্যাবের সাইবার পেট্রোলিং চলমান রয়েছে।

বর্তমানে জঙ্গিদের সক্ষমতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্প্রতি যেসব জঙ্গি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়েছে তাদেরকে আমরা গ্রেফতার করেছি। আরও বেশ কয়েকজন জঙ্গি র‌্যাবের নজরদারির মধ্যে রয়েছে, সম্প্রতি তাদেরকেও আমরা আইনের আওতায় আনতে পারবো বলে আশা করছি। তাদের থেকে আমরা একধাপ এগিয়ে আছি। এই মুহূর্তে র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্যমতে, জঙ্গিদের আক্রমণাত্মক হওয়ার সামর্থ্য নেই।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিরা বিভিন্ন অ্যাপস দিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করছে। নিজেদের মধ্যে তারা অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থ সংগ্রহের জন্য ডাকাতির মতো ঘটনাও তারা বিভিন্ন সময় ঘটিয়েছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে তাদের এসব বিষয় দেখা যাচ্ছে। বিদেশ থেকে জঙ্গিদের অর্থ যারা দিচ্ছেন তাদের বিষয়েও আমরা খোঁজ-খবর রাখছি, তাদের পরিচয় ও তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কল্যাণে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে মন্তব্য করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বড় কোনো ঘটনার পরিকল্পনা তখনই আসে যখন পরিকল্পনার সঙ্গে তাদের সক্ষমতার বিষয়টি চলে আসে। এমন সক্ষমতা তাদের নেই। যেহেতু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই তাই বড় কিছু তারা ঘটাতে পারবে না।

সাইবার স্পেসে জঙ্গিদের তৎপরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু জঙ্গিদের ফিজিক্যাল এক্টিভিটিস করার কোনো সামর্থ্য নেই, তাই প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সুযোগ তারাও নিয়েছে। সাইবার স্পেসে তাদের প্রচার-প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ২৪/৭ ঘণ্টা সাইবার স্পেসে আমাদের পেট্রোলিং চলছে। এমন অনেককে আমরা শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের তৎপরতার কারণে অনলাইনেও জঙ্গিদের কার্যক্রম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে অনলাইনেও জঙ্গিরা খুব বেশি সুবিধা করতে পারছে না।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে