তৃণমূল থেকে বেড়ে উঠা এক নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু

প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২৩; সময়: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ |

৪০ বছরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তার। তৃণমূল থেকে বেড়ে উঠা এক ছাত্রনেতার নাম মহিউদ্দিন বাচ্চু। ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগের নেতৃত্বে, অবশেষে আওয়ামী লীগে। আর আওয়ামী লীগের এসে পেলেন সেই কাঙ্ক্ষিত মনোনয়ন। চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে লড়বেন মহিউদ্দিন বাচ্চু।

চট্টগ্রাম শহরে মহিউদ্দিন বাচ্চুকে চিনেন না এমন মানুষ কম আছে। আশির দশকে ছাত্রলীগের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন মহিউদ্দিন বাচ্চু। নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজকেন্দ্রিক ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আলোচনায় আসেন তিনি। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। একপর্যায়ে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বলয়ের প্রথম সারির নেতাদের একজনের পরিণত হন।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে চট্টগ্রাম রাজনীতিতে পরিচিত মহিউদ্দিন বাচ্চু। মহিউদ্দিন চৌধুরী গ্রুপের পুরো যুবলীগ নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। পুরা চট্টগ্রামের অলি গলি, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গড়ে তুলেছেন কর্মী বাহিনী।

২০১৩ সালে মহিউদ্দিন বাচ্চু চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০২২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই দায়িত্ব ছেড়ে তিনি আওয়ামী লীগের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। দলের ভেতর আলোচনা আছে, যুবলীগ ছাড়লেও সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচন থেকে নেপথ্যে থেকে দেখভাল করেন এখনও বাচ্চুই।

মহিউদ্দিন বাচ্চুর বাড়ি রাউজান উপজেলায়। বাচ্চু একসময় নগরীতে বিলবোর্ডের ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবেও তার পরিচিতি আছে।

নগরীর ডবলমুরিং, খুলশী ও হালিশহর নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আফছারুল আমীন। গত ২ জুন তিনি মারা যান। শূন্য আসনে ৩০ জুলাই উপনির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

হলফনামার তথ্যানুযায়ী- মহিউদ্দিন বাচ্চুর বছরে আয় ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৫ টাকা। ব্যাংকে কোনো জমা থাকলেও রয়েছে নগদ ছয় লাখ ৬৬ হাজার ২৪৫ টাকা। নিজের নামে তিন কোটি ৫০ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকার অকৃষি জমি, প্রোপার্টি ভ্যালি, বিল্ডম্যাক্স ও ফার্মা অ্যাগ্রো নামের তিনটি কোম্পানির এক কোটি টাকার শেয়ার, ৯০ লাখ টাকা মূল্যের দুটি প্রাইভেটকার, ৩০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ৬০ হাজার টাকা আসবাবপত্র রয়েছে।

অন্যদিকে ইউনাইটে কমার্সিয়াল ব্যাংকে (ইউসিবিএল) দুই কোটি ৮২ লাখ ২২ হাজার ৬০৬ টাকার ঋণ রয়েছে মহিউদ্দিন বাচ্চুর। রাজনীতির দীর্ঘ ক্যারিয়ার থাকলেও তার বিরুদ্ধে বর্তমান ও অতীতে কোনো মামলা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, মহিউদ্দিন বাচ্চুর নিজের ও স্ত্রীর নামে কোনো ব্যাংক জমা না থাকলেও নির্ভরশীলদের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ছয় লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আবার নির্ভরশীলদের নামে কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ না থাকলেও আয় দেখানো হয়েছে বছরে চার লাখ ৫৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে স্ত্রী জিনাত আকতারের নামে ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি ফ্ল্যাট, প্রোপার্টি ভ্যালি ও ফার্মা এগ্রো নামের দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে আট লাখ টাকার শেয়ার, সাড়ে তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ৩০ তোলা স্বর্ণালঙ্কার এবং রয়েছে এক লাখ টাকার আসবাবপত্র।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে