গাজীপুরে মেয়র পদে লড়বেন ১০ জন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০১৮; সময়: ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ |

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ ১৮ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও দাখিল করেছেন ১০ জন। আজ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এতে কাউন্সিলর পদে ৩৮৫ জনের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ২৯৪ জন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯৭ জনের মধ্যে ৮৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ২ এপ্রিল থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মেয়র পদে ১৮ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯৭ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৮৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু শেষ দিনে সবাই মনোনয়ন জমা দেননি। আমরা যেসব মনোনয়নপত্র জমা পেয়েছি, তা বিচার বিশ্লেষণ করে দেখব, সব ঠিক আছে কি না। কেউ বাদ পড়বেন কি না, তা পরে জানানো হবে।

সকাল থেকে নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে নির্বাচন উপলক্ষে গাজীপুরে উৎসব ভাব বিরাজ করছে। নিজ নিজ প্রার্থীদের পক্ষে নেতা-কর্মীরা ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। দলে দলে প্রার্থীদের সমর্থকেরা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তবে নির্বাচনে বেশ কিছু প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।

আচরণবিধির তোয়াক্কা করছে না আ.লীগ-বিএনপি
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার তাঁদের মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন হাসান উদ্দিন। বেলা সোয়া একটার দিকে শত শত নেতা-কর্মী নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম মনোনয়নপত্র জমা দেন।

দুই বড় দলের কোনো প্রার্থীই নির্বাচনী আইনের তোয়াক্কা করছেন না। উভয় প্রার্থীই তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম ঘটিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

বেলা ১১টার দিকে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শতাধিক কর্মী-সমর্থক নিয়ে মিছিল দিতে দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে আসেন। একই কাজ করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমও। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানসহ অর্ধশত জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মী নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া কার্যালয়ের বাইরে কয়েক শ কর্মী বড় একটি নৌকা নিয়ে মিছিল করছিলেন।

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থী, প্রস্তাবক, সমর্থকসহ সর্বোচ্চ পাঁচজনের যাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রার্থীসহ কেউই সেই নিয়ম মানছেন না।

প্রার্থীদের এমন আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রার্থীরা যখন মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন, তখন তাঁদের আচরণবিধির বই সরবরাহ করে তা অনুসরণের অনুরোধ করেছিলাম। যখন মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসছেন, তখনো এটি মানার নির্দেশ দিয়েছি। এর বাইরে যদি কেউ নির্বাচনের আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মনোনয়নপত্র জমার পর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা গাজীপুর আওয়ামী লীগের সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। আমরা সারা দেশকে আমাদের গণতন্ত্রের চর্চা দেখিয়ে দিতে চাই।’

বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলনের প্রতিফলন ঘটবে। আমরা বিএনপির সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই।

নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১২ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৫-১৬ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৪ এপ্রিল। ভোট গ্রহণ ১৫ মে।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে