ভারতের আইসিসিআর শিক্ষাবৃত্তি পেল ৭৭ জন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২২; সময়: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ |

চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আইসিসিআর-সুবর্ণ জয়ন্তী শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছে ৭৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থী রয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে আইসিসিআর নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পড়াশোনার জন্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স (আইসিসিআর) শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে থাকে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরদের অভিবাদন জানাচ্ছি। তারা তাদের মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। বর্তমান সময়ে এশিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার আদর্শ গন্তব্য হয়ে উঠেছে ভারত। প্রতিবেশি নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিন-পূর্ব ও মধ্য এশিয়ার অসংখ্য শিক্ষার্থী ভারতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আসছেন।

ভারতে কম টাকায় ভালো পড়ালেখার ব্যবস্থা আছে উল্লেখ করে উপমন্ত্রী বলেন, ইউরোপ আমেরিকায় উচ্চশিক্ষাকে লাভজনক খাত হিসেবে দেখা হয়। তাই এসব দেশে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়। সে তুলনায় ভারতে ফি তুলনামুলকভাবে অনেক কম। ইউরোপ আমেরিকায় পড়তে গিয়ে সাংস্কৃতিক গ্যাপের মধ্যে পড়ে যায়। ফলে তারা আর বাংলাদেশে ফিরে আসে না। কিন্তু ভারতের সাথে আমাদের ধর্ম-সংস্কৃতি ও বিভিন্ন বিষয়ে মিল রয়েছে। যা এসব শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করবে।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন আইসিসিআর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, ভারত পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার দেশগুলোর একটি। একইসাথে এটি পৃথিবীর অন্যতম উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র। পৃথিবীর প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম শতকে। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ভারতীয়রা অবদান রেখেছে। বর্তমানের ইউরোপ আমেরিকা প্রকৌশল ও চিকিৎসা খাতে ভারতীয়রা দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও আইসিটি খাতেও লক্ষ লক্ষ ভারতীয় কাজ করছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রদানে ভারতের সক্ষমতা রয়েছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে উচ্চ মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রদানে ভারত অন্যতম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্প্রীতির উপর টিকে আছে। আমি বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভারতে স্বাগত জানাচ্ছি। আমি আশা করছি তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। একইসাথে ভারতের সংস্কৃতির সাথে নিজেদের একটা সুসম্পর্ক গড়ে তুলবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি উদত ঝা সহ অন্য কর্মকর্তারা।

পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আইসিসিআর ভারত সরকারের অন্যতম প্রধান কর্মসূচি, যার আওতায় মেধাবী বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি স্তরে বিভিন্ন কোর্স করার সুযোগ পায়। আইসিসিআর বৃত্তি বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন শিক্ষাক্রম থেকে আসা এসব শিক্ষার্থী ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে অধ্যয়ন করবে। এর ফলে তারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সেই অঞ্চলের বৈচিত্রকে উপলব্ধি করবে। এই তরুণ মেধাবীরা তাদের সফল শিক্ষাজীবনের পর, বাংলাদেশের সবক্ষেত্রে বিশেষ করে সংস্কৃতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দেবে।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে