এনায়েত আব্বাসীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ
বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জঙ্গির সাথে তুলনা করে রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দেয়ার অপরাধে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসর এনায়েত উল্লা আব্বাসীকে দ্রুত গ্রেফতারসহ সম্প্রতি দুদকে পেশকৃত ১১৬ জন ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বুধবার (১৮ মে) বিকাল ৪ ঘটিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে এনায়েত উল্লা আব্বাসীর প্রতীকী কুশপুত্তলিকাদাহ কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিমসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জঙ্গির সাথে তুলনা করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসর ও ধর্ম ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লা আব্বাসীকে দ্রুত গ্রেফতারসহ সম্প্রতি দুদকে পেশকৃত ১১৬ জন ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তপূর্বক কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইস দ্যা পিপল নামে একটি টকশোতে স্বাধীনতা বিরোধীদের দোসর ধর্ম ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লা আব্বাসী কর্তৃক জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জঙ্গির সাথে তুলনা করা হয়েছে। এহেন ন্যাক্কারজনক রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এনায়েত উল্লা আব্বাসীকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করতে হবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে প্রকাশ্য অবমাননা করার মাধ্যমে এনায়েত উল্লা আব্বাসী রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ সংঘটিত করেছেন। এবিষয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির নীরবতা আমাদেরকে ব্যথিত করেছে। এনায়েত উল্লা আব্বাসী এতোদিন কারাগারে থাকার কথা ছিল। কিন্তু সরকার এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তায় নামলে একাত্তরের মতো আব্বাসী গংরা পাকিস্তানে পালিয়ে যাবে। আব্বাসী ক্ষমা না চাইলে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে যেখানে পাবে সেখানেই প্রতিহত করবে। অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। এখন এসব রাজাকারের দোসরদের শক্ত হাতে প্রতিরোধ করতে হবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, “স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসর ও ধর্ম ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লা আব্বাসী প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে যাচ্ছেন যা দেশের প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। গতকাল শাহবাগ থানায় এনায়েত উল্লা আব্বাসীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এখনোও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, “সম্প্রতি দুদকে পেশকৃত ১১৬ জন ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পত্তি অর্জন, কর ফাঁকি দেয়া ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। দুদকের নিকট আহবান, অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান। কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ অনুযায়ী প্রত্যেকটি দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কেউ আলেম হলেই ছাড় পাবে তা কখনোই হতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোন মন্ত্রী, এমপি ও ব্যবসায়ীকেও ছাড় দেননি। দুদকে পেশকৃত ১১৬ জনের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে বিচার করে শাস্তি দেয়া দুদকের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এনায়েত উল্লা আব্বাসীর নাম এই তালিকায় আসার পর আবার সে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এদের কঠোর হাতে দমন করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং ওয়াজের নামে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়িয়ে সমাজ শান্তি শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করাই এনায়েত উল্লা আব্বাসীর মূল উদ্দেশ্য যা জাতির সামনে ইতিমধ্যে পরিস্কার হয়ে গেছে। জাতীয় সঙ্গীত ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদেরকে নিয়ে আব্বাসী প্রকাশ্য কটূক্তি ও সাম্প্রদায়িক উস্কানী ছড়িয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাদীসের অপব্যাখ্যা দিয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। সম্প্রতি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জঙ্গির সাথে তুলনা করে এনায়েত উল্লা আব্বাসী মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চরম আঘাত করেছেন যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশ্নে সবসময় আপোষহীন থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সরকারের নিকট দাবি, অবিলম্বে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসর ও ধর্ম ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লা আব্বাসীকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। এছাড়াও সম্প্রতি দুদকে পেশকৃত ১১৬ জন ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তপূর্বক কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ দুর্নীতিবাজরা দেশ ও জাতির শত্রু। এনায়েত আব্বাসী আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার না করলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাথে নিয়ে দেশব্যাপী আরোও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”