ইরানকে নিয়ে নতুন সমীকরণ
ইরানকে ঘিরে নতুন এবং জটিল সমীকরণ সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী কর্তৃক জর্ডানে সবশেষ হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি ৩৪ জন আহত হয়েছেন। কোরিয়ার যুদ্ধের পর এটিই মার্কিন বাহিনীর ওপর সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর চাপ বাড়ছে প্রতিশোধমূলক হামলার। এমন পরিস্থিতিতে লেবানন থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
অন্যদিকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীটির ওপর অন্তত নয়বার হামলা চালিয়েছেন বাইডেন। এতে বৈশ্বিক শিপিং ইন্ডাস্ট্রিতে একটি সংকট তৈরি হয়েছে। কাজে আসছে না মার্কিন নেতৃত্বাধীন টাস্কফোর্সও। হুথি বিদ্রোহীদের দাবি, ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত এই হামলা চালানো হবে।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার রাজনৈতিক চাপে পড়েছেন জো বাইডেন। বিশেষ করে রিপাবলিকান পার্টি থেকে। একজন মার্কিন সিনেটর ইরানে এখনই হামলার দাবি তুলেছেন।
ক্রমেই হামলা-পাল্টা হামলা অনিবার্য হয়ে পড়ছে। তবে প্রশ্ন হলো এমন অবস্থা কত দিন চলবে। ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সীমিত হামলায় যেমন অভ্যন্তরীণ সমালোচনা প্রশমিত হবে না তেমনি ইরানকেও থামিয়ে রাখা যাবে না।
ফলে ইরাক ও সিরিয়ায় আরও যথাযথ লক্ষ্যে হামলা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি সরাসরি ইরানেও হামলার অনুমোদন দিতে পারেন বাইডেন। ১৯৮০ সালে জিম্মি উদ্ধারের পর এখন পর্যন্ত ইরানের মাটিতে স্পষ্ট কোনো সামরিক অভিযান চালায়নি যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া ১৯৮৮ সালের পর সিরিয়া বা ইরাকের বাইরে ইরানের বাহিনীরও ওপরও কোনো হামলা চালায়নি দেশটি। তবে মার্কিন পদক্ষেপে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। তাছাড়া বেড়ে যাবে হতাহতের সংখ্যাও।
সব দিক বিবেচনায় এই মুহূর্তে উভয় সংকটে বাইডেন। কারণ মাঝারি ধরনের হামলা একদিকে যেমন যথেষ্ট নয় অন্যদিকে বড় হামলায় অন্যান্য সমস্যা রয়েছে। যেমন ইরাকে বড় পরিসরে হামলা হলে ইরাকি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি হতে পারে। এতে রাজনৈতিকভাবে জয় হবে ইরানের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ দিয়েও সুবিধা নিতে পারে ইরান।