গোয়ায় ২ দিনব্যাপী জুয়েলারি এক্সপো, যৌথভাবে বিনিয়োগে আগ্রহ ভারতের

প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২২; সময়: ২:৫১ অপরাহ্ণ |

ভারতের গোয়ায় দুই দিনব্যাপী ‘সোনার বাংলা’ শীর্ষক জুয়েলারি এক্সপো বা সোনা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সোনা উৎসবের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে জুয়েলারি শিল্পে গহনা তৈরির নতুন কারখানা স্থাপনে যৌথভাবে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ২৮ জুন ভারতের গোয়ায় হোটেল দ্যা লিলা’য় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেস আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ জুয়েলারি এক্সপো উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর। তিনি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের আছে দক্ষ স্বর্ণ শিল্পী আর ভারতের আছে দক্ষ ডিজাইনার। দু’দেশের এ দুই ধরনের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে যৌথভাবে মার্কেটিং করতে পারবো। প্রতিবেশি দুই দেশ সম্মিলিতভাবে কাজ করলে বিশ্বে জুয়েলারি শিল্পে সবার ওপরে থাকবো। আমাদের কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন গোয়া’র মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। এ সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাবরিনা সোবহান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাজুস সহ-সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফরেন ট্রেড অ্যান্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান বাদল চন্দ্র রায় ‘সোনার বাংলা’ শীর্ষক মেলার আহ্বায়ক হাসমুখ পারেক ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রান্তি নাগভেকার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে জুয়েলারি শিল্পে ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাধিক দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর। এই বৈঠকগুলোতে বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশে জুয়েলারি শিল্পে গহনা তৈরির নতুন কারখানা স্থাপনে যৌথভাবে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা।

তারা বাংলাদেশি কারিগরদের প্রশংসা করে বলেন, হাতে তৈরি গহনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতের ব্যসায়ীরা কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তা দিয়ে এগিয়ে আসতে চান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, জুয়েলারি খাতে বাংলাদেশ থেকে ভারত অনেক এগিয়ে আছে। বাংলাদেশ এখন মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আমার অনুরোধ ভারত আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রতিবেশি হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করুক। ভারতের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। ভারত সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করেলে উভয় দেশের ব্যবসায় উন্নতি ঘটবে। ফলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা আমাদের ব্যবসাকে আরও প্রসারিত করতে পারবো।

ভারতের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বাজুস সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আপনারা যৌথভাবে কারখানা স্থাপন করুন। বাজুস সদস্য নয়, এমন কোনো জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে আপনাদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করবেন না। বাংলাদেশের অনেক জুয়েলারি ব্যবসায়ী আছেন, যারা বাজুসের সদস্য না হয়ে এ ব্যবসার সুনাম ক্ষুণ্ন করছে, তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কোনো ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা পরিচালনা করবেন না।

সায়েম সোবহান আনভীর আরও বলেন, ‘সোনার বাংলা’ এর মতো মেলার আয়োজন আপনারা যখনই করবেন, আমরা তখনই আপনাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবো, ঠিক অনুরূপভাবে আমরা যখন এ ধরনের মেলার আয়োজন করবো, তখন আপনারা অবশ্যই অংশ নেবেন।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেন, আমরা বাংলাদেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের কারিগরি সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য সর্ম্পক আরও উন্নত হোক।

বাজুস সহ-সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফরেন ট্রেড অ্যান্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান বাদল চন্দ্র রায় বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ ভাই ভাই, আমরা একে অন্যের কাজে সহযোগিতা করবো। বর্তমানে বাংলাদেশের ভিশন ম্যানুফ্যাকচারিং। আর এ লক্ষে ভারতকে বাংলাদেশের পাশে চাই। বাংলাদেশ জুয়েলারি ব্যবসা দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) অবদান রাখছে জুয়েলারি খাত। বাংলাদেশের জিডিপি যেটুকু উন্নতি করছে তার পেছনে জুয়েলারি ব্যবসা সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে