জরিমানার টাকা ফেরত চেয়ে কাস্টমস কমিশনারকে আমদানিকারকের চিঠি,ক্ষমতার অপব্যবহার অভিযোগ
চট্টগ্রাম কাস্টমসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমদানিকৃত পণ্য চালানে জরিমানা আদায়ের অভিযোগ এনে জরিমানা টাকা ফেরত বা সমন্বয় চেয়ে কাস্টমস কমিশনার বরাবর চিঠি লিখেছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাদিক এন্টারপ্রাইজের মালিক।
সম্প্রতি কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলমকে লিখা সেই চিঠিতে সাদিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ফারহান সাদিক উল্লেখ করেন,”আমাদের আমদানিকৃত সেলফ অ্যাডহেসিভ ফিল্মের সিপিসি নম্বর তারতম্যের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাদিক এন্টারপ্রাইজকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিপিসি নম্বর ৪০০০-০০০। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধির ভুলের কারণে সিপিসি নম্বর ৪০০০-০০০ স্থলে সিপিসি নম্বর ৪০০০-২৭৩ এ শুল্কায়নের জন্য আবেদন করা হয়। যার ফলে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১৯ টাকা ৩৮ পয়সা অ্যাডভান্স ট্যাক্স বাদ পড়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিযুক্ত সিএন্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি সিপিসি নম্বর ৪০০০-০০০ এ শুল্কায়ন করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টমস কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টমস কর্মকর্তাগণ (উপকমিশনার রোখসানা খাতুন, রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন ইসলাম এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে) আমাদের নিযুক্ত সিএন্ডএফ প্রতিনিধিকে অ্যাডভান্স ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগ করেন। সিএন্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি বারবার সিপিসি নম্বর ৪০০০-০০০ এ শুল্কায়নের অনুরোধ স্বত্বেও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টমস কর্মকর্তাগণের অসহযোগিতা এবং তাদের অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে।আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গুনা ছাড়াও ৪১ হাজার ৬৫৮ টাকা পোর্ট ডেমারেজ এবং ৩০ হাজার ৩৬০ টাকা কন্টেনার ডেমারেজ গুনতে হয়েছে। আমদানিকৃত পণ্যের প্রাথমিক শুল্কায়নকালীন সময়ে উল্লেখিত সিপিসি নম্বর তারতম্যে সিএন্ডএফ এজেন্টর অনিচ্ছাকৃত ভুলের সঙ্গে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নাই।”
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে,”কাস্টমস হাউস চট্টগ্রাম হতে পণ্য ছাড়করণের জন্য নিযুক্ত সিএন্ডএফকে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সংক্ষিপ্ত ন্যায় নির্ণয়ের ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। আমদানিকারক কর্তৃক কোনরূপ ভুল তথ্য ঘোষণা বা মিথ্যা ঘোষণা প্রদান করা হয়নি। যে সংক্ষিপ্ত ন্যয় নির্ণয়ের আবেদন পত্রটি আমদানিকারকের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নাই। এছাড়া আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিমানা আরোপের ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ হতে কোনো বক্তব্য নেয়া হয়নি। প্রাথমিক শুল্কায়ন কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে আমদানিকারকের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পণ্য খালাসের দায়িত্ব সিএন্ডএফ এজেন্টের অনিচ্ছাকৃত যা যথাসময়ে রাজস্ব কর্মকর্তাদের দৃষ্টি গোচরে আনা হয়েছিল। প্রয়োজনীয় সংশোধনীর জন্য। অথচ তা আমলে না নিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এর দায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপিয়ে দিয়ে জরিমানা আদায় করার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। আমর অন্যায়ের প্রতিকার চাই এবং জরিমানার আদেশটি পুূন:বিবেচনাক্রমে তা প্রত্যাহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।”
এ বিষয়ে জানতে,চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন,আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিএন্ডএফ এজেন্ট যদি কোনো ভুল করে থাকেন, তবে সেটি আমদানিকারকের ভুল হিসেবে বিবোচিত হবে। কারণ সিএন্ডএফ আমদানিকারকের হয়ে কাজ করে। আমরা কাস্টমস আইন ও বিধি অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারককে জরিমানা করেছি।