বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা সরাসরি জড়িত: শিক্ষা উপমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২২; সময়: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ |

চট্টগ্রাম: শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন,বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা সরাসরি জড়িত। এর জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।যেখানে ধনী,দরিদ্র,হিন্দু,মুসলমান,বৌদ্ধ খ্রীস্টান সকলে একসাথে অবস্থান করবেন, নিজ নিজ ধর্ম পালন করবেন।

শুক্রবার (৮ জুলাই) বিকাল ৪টায় নগরীর সিনেমা প্যালেস মোড়ে ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের উদ্যোগে আয়োজিত উল্টো রথযাত্রা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন,যারা ধর্মীয় হানাহানি, সাম্প্রদায়িকতার সাথে জড়িত তাদের তালিকা করুন। আওয়ামী লীগ জানে মৌলবাদীদের কিভাবে শায়েস্থা করতে হয়। বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে তারা জনগণের সমর্থন হারিয়ে কুটনৈতিকদের বাসায় গিয়ে গিয়ে ধর্না দিচ্ছে। তাদের সাথে ডিনার করে আমাদের দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এদের ষড়যন্ত্র আমরা কোনোভাবে সফল হতে দিব না। মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তির মধ্যে কোনো দূরত্ব রাখা যাবে না। যারা মৌলবাদী, যারা ধর্মীয় হানাহানি চায় তারা গুজব ছড়ালো আওয়ামী লীগ নাকি ধর্ম শিক্ষা বাদ দিচ্ছি। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই এই বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সকল শিক্ষার্থী আত্মমর্যাদার সাথে নিজ নিজ ধর্ম পড়ালেখা করবে। তারা ব্যক্তি জীবনে তা পালন করবে। মৌলবাদী গৌষ্ঠী আমাকে ইসকনের সদস্য বলে প্রচার করেছে। যার ঈমান শক্ত আছে তার ইসকনের সদস্য হলে সমস্যা হবে না এবং সেখানে গিয়ে খাবার খেলেও সমস্যা হবে না।

সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগ মনেপ্রাণে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দুরা নিরাপদ এবং আওয়ামী লীগই কেবল সকল ধর্মের মানুষকে সাথে নিয়ে কাজ করে। ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি গ্রুপ চেষ্টা করছে। তারা শুধু ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ তাদেরকে মন থেকে প্রত্যাহান করেছে। তাদের কোনো কথা জনগণ বিশ্বাস করে না। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন করতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ আগেও হিন্দুদের সাথে ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী। আর্শীবাদক ছিলেন ইসকন বিভাগীয় কমিটির সম্পাদক ও পুন্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। রথযাত্রা উদযাপন কমিটির মিডিয়া সমন্বয়ক বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ড.জিনোবৌধি ভিক্ষু, জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, পাথরঘাটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর, কাউন্সিলর নিলু নাগ, রুমকী সেনগুপ্ত, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ অর্থ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন চৌধুরী বাবর, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, কৈবল্য ধামের ট্রাস্টি মনিলাল দাশ,সনাতনী জাগরণী সংঘের সভাপতি কাঞ্চন আচার্য্য, রিগান আচার্য্য জাগো হিন্দু পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি রুবেল কান্তি দে, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট হিরু সুশীল,ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক রুপেশ্বর গৌর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।

নগরীর মোড়ে মোড়ে নগরবাসীগণ উলু ধ্বনি, শঙ্খ ধ্বনি, মঙ্গল প্রদীপ পূজার নৈবেদ্য সহকারে জগন্নাথ-বলদেব-সুভদ্রা মহারাণীকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানান। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন পৌরাণিক সাজের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ও বৈদিক সংস্কৃতির চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রাটি সিনেমা প্যালেস থেকে শুরু হয়ে আন্দরকিল্লা, চেরাগী, জামালখান, আসকারদিঘীর পাড়, কাজির দেউড়ি, মেহেদিবাগ, গোলপাহাড় হয়ে প্রবর্তকে গিয়ে শেষ হয়।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে