শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি ডাবল ডেকার বাস নামবে চট্টগ্রামে
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে ১০টি স্মার্ট ও আধুনিক ডাবল ডেকার স্কুল বাস নামাতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রত্যেকটি বাসে সিট সংখ্যা থাকবে ৭৮।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “পাবলিক বাসে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের একা স্কুলে পাঠান না। অভিভাবকরা তাদের ব্যস্ত রুটিনের মধ্য থেকে সময় বের করে সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার ও নিয়ে আসার কাজটা করে। এই কারণে অনেক কর্মজীবী মা চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। স্মার্ট বাস চালু হলে অভিভাবকদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তারা আইপি ক্যামেরা এবং জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে তাদের বাচ্চাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। ”
“চট্টগ্রামকে দেশের প্রথম স্মার্ট জেলা হিসেবে গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ আমরা গ্রহণ করেছি। স্মার্ট স্কুল বাস প্রকল্পের মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য রাখি আমরা। প্রকল্পটিকে একটি টেকসই ব্যবসায়িক মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনকে (বিআরটিসি) আরো ১০টি বাস বরাদ্দ করার অনুরোধ জানিয়েছি। যেন রুট সম্প্রসারণ করা যায়। প্রকল্পটি চট্টগ্রাম শহরের যানজট নিরসন করবে, একইসাথে অভিভাবকদের সময় বাঁচবে। ”
বাসে উঠার পর শিক্ষার্থীরা স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে স্ক্যান করবে। এরপর বার্তা যাবে অভিভাবকদের ডিভাইসে। যাতে লিখা থাকবে বাস ছাড়ার জায়গা ও সময়।
শিক্ষার্থীরা বাস থেকে নামলে অভিভাবকদের ডিভাইসে আরো একটি বার্তা যাবে, যাতে লেখা থাকবে বাস থেকে নামার সময় ও অবস্থান।
এছাড়া অভিভাবকরা বাসে ইনস্টল করা আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে তাদের সন্তানদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। একইসাথে জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে বাসের অবস্থান ট্র্যাক করতে পারেন।
নিজেদের কাছে থাকা স্মার্ট কার্ডের ছোঁয়াতেই এখন থেকে ভাড়া পরিশোধ করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। বিকাশ বা নগদের মতো পরিচিত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রিচার্জযোগ্য এই স্মার্ট কার্ডগুলো।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,স্কুল বাসগুলোকে স্মার্ট স্কুল বাসে রূপান্তরিত করার জন্য দেশব্যাপী প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)-এর কাছে একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিযোগিতায় জিতলে স্মার্ট স্কুল বাস প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। একটি বাসকে স্মার্ট বাসে রূপান্তর করতে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হবে। অ্যাপস তৈরি এবং শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া এখন চলছে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে এবং পরিষেবাটি চালু করতে এক থেকে দুই মাস সময় লাগবে।
বর্তমানে আমরা বহদ্দারহাট-মুরাদপুর থেকে নিউমার্কেট হয়ে চকবাজার-গনি বেকারি-জামালখান-চেরাগী পাহাড়-আন্দরকিল্লা-লালদিঘি কোতোয়ালি এবং অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর-২ নম্বর গেট-জিইসি-টাইগার পাস পর্যন্ত পাঁচটি রুটে ১০টি ডাবল-ডেকার বাস চলছে। তা সত্ত্বেও নগরীর হালিশহর, বড়পোল, ইপিজেড, মোহরা এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুলে স্কুল বাস নেই।বাসের সংখ্যা দ্বিগুণ হলে এসব রুটেও বাস চলবে।