সত্যিকারের একজন অভিভাবক হারালাম: শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো, আর আমরা একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালাম এবং আমি হারালাম সত্যিকারের একজন অভিভাবক। ’
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, এক শোকবার্তায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মলেনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে সাজেদা চৌধুরীর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। ’৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনা তাঁকে একজন অভিভাবক হিসেবে পেয়েছিলেন।
সেই থেকে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত সব সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছায়াসঙ্গী হিসেবেই ছিলেন।
সাজেদা চৌধুরীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় থেকেই তাঁর সঙ্গে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচয় এবং তখন থেকেই তিনি আওয়ামী রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন।
তিনি ১৯৫৬ সালে আওয়ামীলীগে যোগদান করে ’৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখেন। তিনি ’৭০-এর নির্বাচনে সাতজন নারী গণপরিষদ সদস্যের একজন ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল র্পযন্ত তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর তিনি জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেও আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৮৬-১৯৯২ পর্যন্ত পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এর আগে, রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজেদা চৌধুরী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।