রূপকথার গল্পকে হার মানিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনালে রিয়াল
অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন রিয়ালের।রূপকথা বললেও বাড়াবাড়ি হবে না। যে ম্যাচে নিশ্চিত বিদায় জেনে মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্বাগতিক সমর্থকরা, সেই ম্যাচেই বড় জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করলো রিয়াল মাদ্রিদ।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বুধবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ৮৯ মিনিট পর্যন্তও ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের অগ্রগামিতায় ফাইনাল বলতে গেলে হাতের মুঠোয় ছিল তাদের। সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে রিয়াল ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ৩-১ গোলে। ১২০ মিনিটের লড়াই শেষে ৬-৫ গোলের অগ্রগামিতায় ফাইনালে নাম লিখিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে সাত গোলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৪-৩ গোলে জিতেছিল সিটি। তবে ফিরতি লেগ ঘরের মাঠে হওয়ায় রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। করিম বেনজেমা তো বলেই দিয়েছিলেন, মিরাকল ঘটিয়ে ফাইনালে যাবেন তারা।
সেই মিরাকল ঘটলো, ফিরতি লেগে জয় পেলো রিয়াল। তবে সেটাও আরেক মিরাকলের গল্প লিখে। এমন এক ম্যাচ তারা জিতলো যে ম্যাচে ৮৯ মিনিট পর্যন্ত একটি শটও লক্ষ্যে ছিল না স্বাগতিকদের। এরপর হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ানো। সব মিলিয়ে ম্যাচে গোলের জন্য রিয়ালের ১৪ শটের ৫টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১৫ শটের ১০টি লক্ষ্যে রেখেও লক্ষ্যপূরণ হলো না সিটির।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭৩ মিনিটের মাথায় গোলমুখ খোলে সিটি। বার্নাদো সিলভা বল বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারালেও সেটা পেয়ে যান ডানদিকে ছুটে যাওয়া রিয়াদ মাহরেজ। কোনাকুনি শটে তা জালে জড়িয়ে দেন ফরাসি-আলবেনিয়ান এই উইঙ্গার।
এরপরই রিয়ালের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। ম্যাচের তখন ৮৯ মিনিট পেরিয়েছে। সিটির জয় সময়ের ব্যাপার। এমন মুহূর্তে রদ্রিগোর জাদু। ১ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে রিয়ালকে অবিশ্বাস্যভাবে লড়াইয়ে ফেরান দ্বিতীয়ার্ধে টনি ক্রুসের বদলি হিসেবে নামা এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
৯০ মিনিটে বেনজেমার ডান দিক থেকে আলতো পায়ের ক্রস বক্সের মাঝখানে একদম গোলরক্ষকের সামনে পেয়ে জালে জড়ান রদ্রিগো। পরের মিনিটে মার্কো আসেনসিওর উঁচু ক্রস লাফিয়ে উঠে হেড করেন তিনি। ২-১ গোল এগিয়ে থাকা রিয়াল খেলা টেনে নেয় অতিরিক্ত সময়ে (দুই লেগ মিলিয়ে দুই দলের সমান গোল তখন)।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বেনজেমার নিঁখুত শট কোনোমতে ফেরান সিটি গোলরক্ষক এদেরসন। তবে পঞ্চম মিনিটে এই বেনজেমাকেই বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়ে দলের সর্বনাশ ডাকেন ডায়াস। ঠান্ডা মাথার পেনাল্টিতে রিয়ালকে ফাইনালে তোলা গোলটি করেন বেনজেমা।
আগামী ২৯ মে শিরোপা লড়াইয়ে আরেক ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল