ইয়ুথ ডেলিগেশনের মাধ্যমে ১০০ তরুণের ভারত ভ্রমণের সুযোগ
করোনা মহামারিতে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ফের চালু হয়েছে বাংলাদেশের ১০০ তরুণ তরুণীর ভারত ভ্রমণের কর্মসূচি ইয়ুথ ডেলিগেশন।
রবিবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া’ শীর্ষক কর্মসূচিটি পুনরায় চালুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
হাছান মাহমুদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের এক কোটি মানুষকে ভারত আশ্রয় দিয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে ভারতীয় সেনারা প্রাণ দিয়েছিলেন, যা কখনো ভুলবার নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে চলেছেন। তরুণদলের সদস্য হয়ে ভারত ভ্রমণে অনেক কিছু জানার ও শেখার আছে।
তিনি বলেন, কৃষি অর্থনীতির যুগে সমগ্র ভারতবর্ষে আমরা ধনী ছিলাম। ইউরোপে বছরে একটি বা দু’টি ফসল হতো, আমাদের হতো তিনটি। আমরা ধনী ছিলাম বিধায় এখানে পর্তুগিজ, ওলন্দাজ, ইংরেজ, ফরারিরা এসেছে এবং ধনীর বাড়িতেই ডাকাত পড়ে, যদিও তাদের সবাইকে আমি ডাকাত বলছি না। এরপর অর্থনীতি শিল্পনির্ভর হয়ে যাওয়ার পর দৃশ্যপটটা বদলে যায়। তখন আমাদের কাঁচামাল ব্যবহার করে ইউরোপীয়রা শিল্প গড়ে ধনী হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, করোনার কারণে দু’বছর বন্ধ থাকার পর ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন ২০২২’ এর প্রক্রিয়া উদ্বোধন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত কারণ, এ প্রক্রিয়া দু’দেশের মৈত্রীবন্ধনকে আরও গাঢ় করবে।
পরে মন্ত্রী ও হাইকমিশনার ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন ২০২২’-এ আবেদনের পোর্টাল ও লোগো উদ্বোধন করেন। পোর্টালটি আজ (১৫ মে) থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আবেদন গ্রহণের জন্য সক্রিয় থাকবে।
এরপর ভারতীয় হাইকমিশনের ওই পোর্টালে গিয়ে কীভাবে এই ডেলিগেশনের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে তা সবিস্তারে তুলে ধরা হয়।
এরপর ডেলিগেশন কর্মসূচির সাবেক ব্যাচগুলোর কয়েকজন প্রতিনিধির অনুভূতি নিয়ে বানানো ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়। আয়োজনের শেষভাগে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এই পরিবেশনায়ও অংশ নেন ডেলিগেশন কর্মসূচির সাবেক ব্যাচগুলোর সদস্যরা।
২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ইচ্ছায় এই ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া কার্যক্রমের শুরু হয়। এটি ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি যুব সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারকের অংশ
এই কর্মসূচির আওতায় ভ্রমণকারীদের মধ্যে থাকেন শিক্ষা, চিকিৎসা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ক্রীড়া, প্রকৌশল, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন অঙ্গনের প্রতিনিধিত্বশীল ভূমিকায় থাকা তরুণ-তরুণীরা। তারা যেমন স্ব স্ব আচার-সংস্কৃতি বিনিময় করেন ভারতে, আবার ভারতবর্ষে যা দেখার সুযোগ পান, যা ধারণ করতে পারেন, তা এসে পৌঁছে দেন বাংলাদেশে। এই বিনিময়টা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীকে নিয়ে যায় আরও অনন্য উচ্চতায়।
যেভাবে আবেদন করবেন
আবেদন করতে ইচ্ছুক তরুণরা ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগ্রহীদের জীবন বৃত্তান্ত পূরণ করতে হবে এবং অত্যাবশ্যকীয় হিসেবে নির্মিত একটি ফেসবুক ভিডিওর লিংক শেয়ার করতে হবে।
ফেসবুক ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ১২০ সেকেন্ডের বেশি হওয়া যাবে না এবং এর মাধ্যমে আবেদনকারীরা তাদের পরিচিতির পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে তারা কেন অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য তা তুলে ধরতে পারবেন।