নগরের ২০ খালে ৩৬ অস্থায়ী বাঁধ,অপসারণের জন্য সিডিএকে চিঠি চসিকের

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২; সময়: ১:০৪ অপরাহ্ণ |

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণকাজের জন্য খালের ভেতরে দেওয়া অস্থায়ী বাঁধ এখনো পুরোপুরি অপসারণ করা হয়নি। এখন পর্যন্ত ২০টি খালে অন্তত ৩৬টি বাঁধ রয়েছে। এসব বাঁধের কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে অল্প বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি জমে থাকায় চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

এই জন্য এসব বাঁধ চলতি মাসের মধ্যে অপসারণের জন্য প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। বৃহস্পতিবার বিকেলে এই চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় খালগুলোতে অস্থায়ীভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

চট্টগ্রাম নগরে ৫৭টি খাল রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালে কাজ চলছে। এসব খালের মধ্যে কী পরিমাণ অস্থায়ী বাঁধ রয়েছে এত দিন তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বা সিটি করপোরেশনের কাছে ছিল না। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সরেজমিনে এই তালিকা করে।

সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী সমন্বয় সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খালের ভেতর থেকে বাঁধ অপসারণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। এ জন্য সিডিএ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বারবার তাগাদাও দেন তিনি।

সিটি করপোরেশনের তালিকা অনুযায়ী, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকা ৩৬টি খালের মধ্যে ১৬টিতে কোনো বাঁধ নেই। বাকি ২০টি খালের কোনোটিতে ১টি, কোনোটিতে ২টি, এমনকি ৫টি পর্যন্ত অস্থায়ী বাঁধ রয়েছে।

সবচেয়ে বেশি বাঁধ রয়েছে নগরের মহেশ খালে, পাঁচটি। নগরের পানি নিষ্কাশনে চাক্তাইয়ের পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এই খালের জেলে পাড়া, বিডিআর হলের সামনে, আর্টিলারি ব্রিজের পাশে, পূর্ব নিমতলা বন্দর এলাকা ও মনসুর মার্কেট এলাকায় বাঁধ রয়েছে।

পানি প্রবাহের প্রধান মাধ্যম চাক্তাই খালের বহদ্দারহাট পুলিশ বক্স, হাইজ্জ্যর পোল ও ফুলতলা এলাকায় বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মির্জা খালের খতিবের হাট মসজিদ, হাদু মাঝির পাড়ার মসজিদ, চান মিয়া সওদাগর পুল ও কালারপোলে মাটির বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের তথ্য মতে, নগরের মোহনা ক্লাব ও রাহাত্তর পুল এলাকায় মীর্জা খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত বাঁধ রয়েছে শীতলঝর্ণা খাল, ডোম খাল, উত্তরা খাল, ত্রিপুরা খাল, চশমা খাল, গয়নার ছড়া খাল, সুরভী খাল, গুলজার খাল, রামপুর খাল, নাছির খান খাল, বারমাসিয়া খাল, টেকপাড়া খাল, ৭ নম্বর খাল, ৯ নম্বর গুপ্ত খাল, ১৫ নম্বর খাল, ১৭ নম্বর খালে বাঁধ রয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রাম নগরের যেসব এলাকা পানিতে তলিয়ে যায় তার একটা হচ্ছে দুই নম্বর গেট। এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম চশমা খাল। কিন্তু দুই নম্বর গেট এলাকায় নির্মাণকাজের জন্য খালের এক পাশে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে। চশমা খালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাল মির্জা খাল। নগরের মির্জাপুল, শুলকবহর, বহদ্দারহাটের খতিবের হাট, মাঝির দোকান, শমসের পাড়া দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়েছে এই খাল। খালটির অন্তত তিনটি স্থানে অস্থায়ী বাঁধ রয়েছে। পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে খালের একটি অংশে ঝোপঝাড় জন্মেছে।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে