আফগানিস্তানে নারীদের বোরকা পরা আবার বাধ্যতামূলক করলো তালেবান
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান নির্দেশ জারি করেছে যে,এখন থেকে আফগান নারীদের প্রকাশ্য স্থানে মুখ-ঢাকা বোরকা পরতে হবে। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম আবার আফগানিস্তানে নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হলো।
কোন নারী এই নিয়ম না মানলে এবং সরকারী হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করলে তার পরিবারের পুরুষ সদস্য বা অভিভাবকের তিন দিন পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
১৯৯০ এর দশকে তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল তখনো আফগানিস্তানে বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
তবে গত বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তালেবান বোরকা পরতে বাধ্য করার চেষ্টা করেনি।
আফগানিস্তানে অনেক নারী এমনিতেই বোরকা পরেন। তবে অনেক নারীকে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে, কেবলমাত্র মাথার চুল ঢাকার জন্য কিছু পরতে দেখা যায়।
বোরকা নিয়ে এই নতুন নির্দেশ জারি করেছে আফগানিস্তানের ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তালেবান কর্মকর্তারা এই নির্দেশকে একটি ‘পরামর্শ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও এটি না মানলে ধাপে ধাপে কী ঘটবে, তা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন। যেমন:
•প্রথমত, কেউ যদি বোরকা না পরে তাদের বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তারা ঐ নারীর স্বামী, ভাই বা পিতার সঙ্গে কথা বলবেন।
•দ্বিতীয় ধাপে ঐ নারীর পুরুষ অভিভাবককে সরকারি দফতরে ডেকে পাঠানো হবে
•তৃতীয় ধাপে ঐ পুরুষ অভিভাবককে আদালতে নেয়া হবে এবং তিন দিন পর্যন্ত সাজা হতে পারে।
আফগানিস্তানে প্রাত্যহিক জীবনে তালেবান যেসব কঠোর ধর্মীয় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তার বেশিরভাগই নারীদের টার্গেট করে।
আফগানিস্তান হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে লিঙ্গভেদে শিক্ষাকে সীমিত করে দেয়া হয়েছে। তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে এটি একটি প্রধান আপত্তির জায়গা।
আফগানিস্তানে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই এখন নারীদের কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না।