ছাত্রদলকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন ও ঢাবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি
ঢাকা: ছাত্রদল কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি, হত্যার হুমকি ও স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপরাধে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলকে নিষিদ্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণের দাবিতে আজ ২৯ মে রবিবার বিকাল ৩টায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে ঢাবি উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিমসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ে যেয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাবি শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিম, সহ-সভাপতি রাসেল হাওলাদার ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম তুষার।
এর আগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “অছাত্রদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদল কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে কটূক্তি, হত্যার হুমকি ও স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। গত কয়েকদিন যাবত ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত করার অপরাধে স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর মদদদাতা ও অছাত্রদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলকে দ্রুত নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।”
সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, “সন্ত্রাসী বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়ে উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত ক্যাম্পাসকে অশান্ত করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। অছাত্র ও বহিরাগত ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ আহমেদ জুয়েল কর্তৃক উস্কানীমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করেছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের হামলায় ইতিমধ্যে ঢাবির অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক স্থাপনা ভাংচুর করে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিলিং মিশন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। শাহবাগ থানায় মামলা হলেও এখনো পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি।”
সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, “শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাী জন্য ক্যাম্পাসে সিসি টিভির ফুটেজ দেখে ছাত্রদলের প্রত্যেকটি সন্ত্রাসীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি, অছাত্রদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ আহমেদ জুয়েল অবৈধভাবে ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এধরণের রাষ্ট্র বিরোধী উসকানীমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করার অপরাধে অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “দীর্ঘসময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। বিএনপি-জামাতের শাসনামলের মতো এখন আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা হয়না। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা-কার্যক্রম যথাসময়ে শেষ করে যোগ্যতা অনুযায়ী নিজ নিজ পেশায় যুক্ত হয়ে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত হচ্ছেন। এখন শিক্ষার্থীদেরকে আর সেশনজটে ভুগতে হয়না। গুলির শব্দে ঘুম ভাঙেনা হলের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষাঙ্গনের বর্তমান শান্ত পরিবেশটাই শিক্ষার্থীরা সবসময় প্রত্যাশা করে। ঢাবির শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির আহবান বারবার ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও ছাত্রদলের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকে অবশ্যই প্রতিহত করবে ঢাবির শিক্ষার্থীরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষাখাতসহ সকল ক্ষেত্রে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। সেই উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা সহ্য করতে না পেরে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামাতের দোসররা আবার রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা তৈরীর মাধ্যমে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় অছাত্রদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলের নেতারা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে একের পর এক উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে যা অবশ্যই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে সবসময় আপোষহীন থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা এসে প্রকাশ্য দেশের সরকার প্রধানকে নিয়ে কটূক্তি ও উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত করার অপরাধে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সংগঠন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসরদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে না। ছাত্র রাজনীতির নামে স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে অতীতের ন্যায় আবারও সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত করার অপরাধে অবৈধ সামরিক শাসক স্বৈরাচার জিয়া কর্তৃক অছাত্রদের দ্বারা তৈরীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলকে জঙ্গি সংগঠন ছাত্রশিবিরের ন্যায় দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরোও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।”