শেখ হাসিনার সরকার ইসলামের জন্য যা করেছে অতীতের কোন সরকার তা করেনি: তথ্য মন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২; সময়: ৬:০২ অপরাহ্ণ |

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ইসলামের জন্য,আলেম ওলামাদের জন্য যা করেছে অতীতের কোন সরকার তা করেনি।

তিনি বলেন,আলেম ওলামাদের শত বছরের পুরনো দাবি ছিল বাংলাদেশে একটি স্বতন্ত্র ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।ব্রিটিশ ভেঙে পাকিস্তান হলো, এরপর বাংলাদেশ হলো, কিন্তু ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রতিষ্ঠা হয়নি।

জামায়াত ইসলামীকে সাথে নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলো,এরশাদ সাহেব মাওলানা মান্নান সাহেবকে ধর্ম মন্ত্রী বানালো কিন্তু ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় হয়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলেন।

শনিবার (৪ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক ও আলেমদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লোকমানুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জসিম উদ্দিন তালুকদারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী দরবার-এ-আস্তানা শরীফের পীর গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, মেহেরিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী। উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, ইউএনও আতাউল গণি ওসমানি, পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির দাবি বহু বছরের পুরনো। বেগম খালেদা জিয়া কিংবা বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনো এই দাবি ছিল। উনি আলেম-ওলামাদের নিয়ে ভাত খাওয়াতেন, কিন্তু দাবি পূরণ করেননি। আমাদের রাঙ্গুনিয়ার কৃতি সন্তান মাওলানা আহমদ সফি সাহেব আলেম-ওলামাদের নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলেন যেনো কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেন।

তিনি বলেন, অনেকে ভেবেছেন আমাদের নেত্রী আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়ন হবেনা। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। স্বীকৃতি দেওয়ার পর অনেকে বলেছেন স্বীকৃতি দিয়েছেন কিন্তু চাকুরী হবেনা, চাকুরী পেলে বেতন পাবেননা। কিন্তু আমাদের নেত্রী শুধু কওমি সনদের স্বীকৃতি দেননি, তাদের চাকুরিও দিয়েছেন, তারা এখন সরকারি বেতন পাচ্ছেন। এটি কল্পনার বাইরেও ছিলো।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে সারাদেশে এক লক্ষ মসজিদ ভিত্তিক মক্তব করা হয়েছে, রাঙ্গুনিয়াতেও দুই শতাধিক মসজিদ ভিত্তিক মক্তব প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রতিটি মক্তবের আলেম ৫২’শ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এটি আলেম সমাজ কখনো ভাবেনি। দারুল আরকাম এবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রতিটিতে দু’জন করে শিক্ষক ১২ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এখন হজে যাবার সময় ঢাকায় ইমিগ্রেশন হয়ে যাচ্ছে। সৌদি আরব গিয়ে আগের মতো ঘন্টার পর ঘন্টা থাকতে হচ্ছেনা।
আলেমদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা কেউ কখনো ভাবেনি। ব্রিটিশ আমলে দেশ বিভক্ত হয়েছিল মুসলমানদের জন্য একটি দেশ, হিন্দুদের জন্য আরেকটি দেশ। সেই পাকিস্তান আমলেও জেলা-উপজেলায় সরকারি ভাবে কোন মসজিদ হয়নি।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার ইসলামের জন্য এবং আলেম ওলামাদের জন্য যে কাজগুলো করেছে, আপনারা আলেমরা অন্যদের কাছে তা দয়া করে বলবেন- আপনাদের কাছে এটুকুই ফরিয়াদ থাকল- বলেন তথ্যমন্ত্রী।

নিজের নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় ইসলামের খেদমতে নানা কাজ করা হয়েছে উল্লেখ করে ড,. হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা আমাকে এমপি নির্বাচিত করার পর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ইসলাম এবং আলেম ওলামাদের খেদমত করার জন্য। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন ও আমাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিশটার বেশি নতুন মসজিদ ভবন তৈরি করা হয়েছে। এভাবে প্রতিটি মসজিদ মাদরাসা এতিমখানা ও হেফজখানায় সরকারি অনুদানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সহায়তাও পৌঁছানো হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় আলেম-ওলামাদের মাঝে বক্তব্য রাখেন রাঙ্গুনিয়া নুরুল উলুম কামিল মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা নজমুল হক নঈমী, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. মাওলানা আবদুল মাবুদ, আলমশাহপাড়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রাণীরহাট আল আমিন হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম আলকাদেরী, খন্ডলিয়াপাড়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মো. সুলতান, কোদালা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আবদুল কাদের, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা মাওলানা সৈয়দ আইয়ুব নুরী, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

ডিজাইন ও কারিগরি: চট্টগ্রাম লাইভ
উপরে